Your cart is currently empty!

পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
পেঁয়াজ চাষ
উন্নত জাতঃ বারি পেয়াজ-১, বারি পেয়াজ-২ এবং বারি পেয়াজ-৩, বারি পেয়াজ-৪, বারি পেয়াজ-৫ , বারি পাতা পেয়াজ-১। বারি পাতা পেয়াজ-১ সারা বছর চাষ করা যায়। বারি পেয়াজ-১ ও বারি পেয়াজ-৪ শীতকালীন এবং বারি পেয়াজ-৩ ও, বারি পেয়াজ-৫ শীতকালে চাষ উপযোগী ।
পুষ্টিগুনঃ পেঁয়াজ খাবার হজমের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন এনজাইম বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে দ্রুত খাবার হজম হয়। একটি বড় পেঁয়াজে ৮৬.৮ শতাংশ পানি, ১.২ শতাংশ প্রোটিন, ১১.৬ শতাংশ শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ০.০৪ শতাংশ ফসফরাস ও ০.৭ শতাংশ লোহা থাকে। এছাড়া পেঁয়াজের পাতা ও ডাটাতে ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে ।
বপনের সময়ঃ খরিফ মৌসুমে চাষের জন্য জুলাই-আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র) ও রবি মৌসুমে চাষের জন্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ (মাঘ-ফাল্গুন) মাসে বীজ তলায় বীজ বপন করতে হয়।
চাষপদ্ধতি: সরাসরি জমিতে বীজ বুনে, কন্দ ও চারা রোপণ করে পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায়।গভীর চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। পেঁয়াজের জমি চাষের জন্য ডিস্কহ্যারো ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এতে মাটি পুনরায় শক্ত হয়ে যায়। আগাছামুক্ত ঝুরঝুরা সমতল মাটি পেঁয়াজের জন্য উত্তম। সারি থেকে সারি দূরত্ব ৮ ইঞ্চি এবং পেঁয়াজ থেকে পেঁয়াজের দূরত্ব ৪ ইঞ্চি রাখতে হবে।
বীজের পরিমানঃ শতকে ১৫-১৬ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। বীজ বোনার পর ঝুরঝুরে মাটি দিয়ে ১ সেমি. পুরু করে ঢেকে দিতে হয়। বীজ বোনার পর হালকা সেচ দিয়ে বীজতলা ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে এবং তারপর প্রয়োজন অনুসারে ১-২ দিন অন্তর সেচ দিতে হবে।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম | শতক প্রতি সার |
গোবর | ৩২-৪০ কেজি |
ইউরিয়া | ৯৭০ গ্রাম |
টিএসপি | ৮৯০ গ্রাম |
পটাশ | ৬১০ গ্রাম |
জিপসাম | ৪৪০ গ্রাম |
শেষ চাষের সময় সবটুকু গোবর বা কম্পোস্ট, টিএসপি, জিপসাম এবং ইউরিয়া ও পটাশের অর্ধেক জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া ও পটাশ সার যথাক্রমে চারা রোপণের ২৫ এবং ৫০ দিন পর ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ চারা মাটিতে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ৩ দিন অন্তর সেচ দিন। পেঁয়াজ ফসল দীর্ঘদিন সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে এবং হঠাৎ করে সেচ দিলে কন্দের শল্কপত্র ফেঁটে যেতে পারে এবং বাজার মূল্য কমে যায়। তাই সবসময় জমিতে জো অবস্থা বজায় রাখুন। সেচের পর জমি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে। পেঁয়াজ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। পেঁয়াজের জমিতে পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখুন।
আগাছাঃ সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা পরিস্কার করতে হবে। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। রবি মৌসুমে নিম্ন তাপমাত্রা (১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে) থেকে চারা রক্ষার জন্য বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে ।
পোকামাকড়ঃ
- পেঁয়াজের থ্রিপস পোকা দমনে ডাইমেথোয়েট গ্রুপের কীটনাশক (রগর অথবা টাফগর ২০ মিলি অথবা ৪মুখ ) ১০ লিতার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন।অথবা ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
- জাব পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- ক্ষুদে মাকড়ের আক্রমণ সালফার গ্রুপের (কুমুলাস ডিএফ বা রনোভিট ৮০ ডব্লিউজি বা থিওভিট ৮০ ডব্লিউজি বা সালফোলাক ৮০ ডব্লিউজি, ম্যাকসালফার ৮০ ডব্লিউজি বা সালফেটক্স ৮০ ডব্লিউজি) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের কাঁটুই পোকা কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি ২০ মিলি / ৪ মুখ) অথবা ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (ক্যারাটে ২.৫ ইসি অথবা ফাইটার প্লাস ২.৫ ইসি ১৫ মিলি / ৩মুখ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
রোগবালাইঃ
- পেয়াজের পার্পল ব্লচ রোগ দমনে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- নোইন অথবা এইমকোজিম ২০ গ্রাম) অথবা মেনকোজেব+ মেটালোক্সিল জাতীয় ছত্রাকনাশক (রিডোমিল গোল্ড ২০গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের ব্ল্যাক স্টক রট দমনের জন্য প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের স্তেম্ফাইলিয়াম লিফ ব্লাইট রোগের ক্ষেত্রে মেনকোজেব+ মেটালোক্সিল জাতীয় ছত্রাকনাশক রিডোমিল গোল্ড ২০গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের গলা ও কন্দ পঁচা রোগের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- নোইন অথবা এইমকোজিম ২০ গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন।
ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৪০-৫০ কেজি।
সংরক্ষনঃ পেঁয়াজ গাছ পরিপক্ব হলে এর গলার দিকের টিস্যু নরম হয়ে যায়। ফলে পাতা হেলে পড়ে। যখন শতকরা ৭০-৮০ ভাগ পাতার অগ্রভাগ শুকিয়ে নেতিয়ে বা ভেঙ্গে পড়ে, ঠিক তখনই পেঁয়াজ সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। পেঁয়াজ তোলার পর ৮-১০ দিন ছায়ায় ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। খারাপ বা পাকা পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলতে হবে। যে জায়গায় পেঁয়াজ রাখা হবে সেখানে বায়ু চলাচলের সুযোগ থাকতে হবে। টিনের ঘরের সিলিং এ পেঁয়াজ রাখলে তা ২০-২৫ সেন্টিমিটারের বেশি পুরু না করে না রাখাই ভালো। মেঝের দুই ফুট ওপরে নির্মিত মাচায় পেঁয়াজ রাখলে তাতে সর্বোচ্চ ১০-১৫ সেমি পুরু করে পেঁয়াজ রাখতে হবে। কিছুদিনের জন্য পাতলা বুনটের চটের বস্তায় বা প্লাস্টিকের নেটের ব্যাগে পুরে সারিবদ্ধভাবে খামাল দিয়েও পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়। মাঝে মধ্যে সংরক্ষিত পেঁয়াজ নাড়াচাড়া করে দিতে হবে এবং পচা পেঁয়াজ বেছে সরিয়ে ফেলতে হবে।
পেয়াজ চাষ পদ্ধতি https://www.bamis.gov.bd/crops/view/46

পেঁয়াজ চাষ পদ্ধতি
পেঁয়াজ চাষ
উন্নত জাতঃ বারি পেয়াজ-১, বারি পেয়াজ-২ এবং বারি পেয়াজ-৩, বারি পেয়াজ-৪, বারি পেয়াজ-৫ , বারি পাতা পেয়াজ-১। বারি পাতা পেয়াজ-১ সারা বছর চাষ করা যায়। বারি পেয়াজ-১ ও বারি পেয়াজ-৪ শীতকালীন এবং বারি পেয়াজ-৩ ও, বারি পেয়াজ-৫ শীতকালে চাষ উপযোগী ।
পুষ্টিগুনঃ পেঁয়াজ খাবার হজমের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন এনজাইম বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে দ্রুত খাবার হজম হয়। একটি বড় পেঁয়াজে ৮৬.৮ শতাংশ পানি, ১.২ শতাংশ প্রোটিন, ১১.৬ শতাংশ শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ০.০৪ শতাংশ ফসফরাস ও ০.৭ শতাংশ লোহা থাকে। এছাড়া পেঁয়াজের পাতা ও ডাটাতে ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম রয়েছে ।
বপনের সময়ঃ খরিফ মৌসুমে চাষের জন্য জুলাই-আগষ্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র) ও রবি মৌসুমে চাষের জন্য ফেব্রুয়ারী-মার্চ (মাঘ-ফাল্গুন) মাসে বীজ তলায় বীজ বপন করতে হয়।
চাষপদ্ধতি: সরাসরি জমিতে বীজ বুনে, কন্দ ও চারা রোপণ করে পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায়।গভীর চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। পেঁয়াজের জমি চাষের জন্য ডিস্কহ্যারো ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ এতে মাটি পুনরায় শক্ত হয়ে যায়। আগাছামুক্ত ঝুরঝুরা সমতল মাটি পেঁয়াজের জন্য উত্তম। সারি থেকে সারি দূরত্ব ৮ ইঞ্চি এবং পেঁয়াজ থেকে পেঁয়াজের দূরত্ব ৪ ইঞ্চি রাখতে হবে।
বীজের পরিমানঃ শতকে ১৫-১৬ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। বীজ বোনার পর ঝুরঝুরে মাটি দিয়ে ১ সেমি. পুরু করে ঢেকে দিতে হয়। বীজ বোনার পর হালকা সেচ দিয়ে বীজতলা ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে এবং তারপর প্রয়োজন অনুসারে ১-২ দিন অন্তর সেচ দিতে হবে।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম | শতক প্রতি সার |
গোবর | ৩২-৪০ কেজি |
ইউরিয়া | ৯৭০ গ্রাম |
টিএসপি | ৮৯০ গ্রাম |
পটাশ | ৬১০ গ্রাম |
জিপসাম | ৪৪০ গ্রাম |
শেষ চাষের সময় সবটুকু গোবর বা কম্পোস্ট, টিএসপি, জিপসাম এবং ইউরিয়া ও পটাশের অর্ধেক জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া ও পটাশ সার যথাক্রমে চারা রোপণের ২৫ এবং ৫০ দিন পর ২ কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ চারা মাটিতে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ৩ দিন অন্তর সেচ দিন। পেঁয়াজ ফসল দীর্ঘদিন সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে এবং হঠাৎ করে সেচ দিলে কন্দের শল্কপত্র ফেঁটে যেতে পারে এবং বাজার মূল্য কমে যায়। তাই সবসময় জমিতে জো অবস্থা বজায় রাখুন। সেচের পর জমি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে। পেঁয়াজ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। পেঁয়াজের জমিতে পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখুন।
আগাছাঃ সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা পরিস্কার করতে হবে। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। রবি মৌসুমে নিম্ন তাপমাত্রা (১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে) থেকে চারা রক্ষার জন্য বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে ।
পোকামাকড়ঃ
- পেঁয়াজের থ্রিপস পোকা দমনে ডাইমেথোয়েট গ্রুপের কীটনাশক (রগর অথবা টাফগর ২০ মিলি অথবা ৪মুখ ) ১০ লিতার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন।অথবা ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
- জাব পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- ক্ষুদে মাকড়ের আক্রমণ সালফার গ্রুপের (কুমুলাস ডিএফ বা রনোভিট ৮০ ডব্লিউজি বা থিওভিট ৮০ ডব্লিউজি বা সালফোলাক ৮০ ডব্লিউজি, ম্যাকসালফার ৮০ ডব্লিউজি বা সালফেটক্স ৮০ ডব্লিউজি) প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২৫০ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের কাঁটুই পোকা কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি ২০ মিলি / ৪ মুখ) অথবা ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (ক্যারাটে ২.৫ ইসি অথবা ফাইটার প্লাস ২.৫ ইসি ১৫ মিলি / ৩মুখ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
রোগবালাইঃ
- পেয়াজের পার্পল ব্লচ রোগ দমনে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- নোইন অথবা এইমকোজিম ২০ গ্রাম) অথবা মেনকোজেব+ মেটালোক্সিল জাতীয় ছত্রাকনাশক (রিডোমিল গোল্ড ২০গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের ব্ল্যাক স্টক রট দমনের জন্য প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের স্তেম্ফাইলিয়াম লিফ ব্লাইট রোগের ক্ষেত্রে মেনকোজেব+ মেটালোক্সিল জাতীয় ছত্রাকনাশক রিডোমিল গোল্ড ২০গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
- পেঁয়াজের গলা ও কন্দ পঁচা রোগের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- নোইন অথবা এইমকোজিম ২০ গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন।
ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৪০-৫০ কেজি।
সংরক্ষনঃ পেঁয়াজ গাছ পরিপক্ব হলে এর গলার দিকের টিস্যু নরম হয়ে যায়। ফলে পাতা হেলে পড়ে। যখন শতকরা ৭০-৮০ ভাগ পাতার অগ্রভাগ শুকিয়ে নেতিয়ে বা ভেঙ্গে পড়ে, ঠিক তখনই পেঁয়াজ সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। পেঁয়াজ তোলার পর ৮-১০ দিন ছায়ায় ভাল করে শুকিয়ে নিতে হবে। খারাপ বা পাকা পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলতে হবে। যে জায়গায় পেঁয়াজ রাখা হবে সেখানে বায়ু চলাচলের সুযোগ থাকতে হবে। টিনের ঘরের সিলিং এ পেঁয়াজ রাখলে তা ২০-২৫ সেন্টিমিটারের বেশি পুরু না করে না রাখাই ভালো। মেঝের দুই ফুট ওপরে নির্মিত মাচায় পেঁয়াজ রাখলে তাতে সর্বোচ্চ ১০-১৫ সেমি পুরু করে পেঁয়াজ রাখতে হবে। কিছুদিনের জন্য পাতলা বুনটের চটের বস্তায় বা প্লাস্টিকের নেটের ব্যাগে পুরে সারিবদ্ধভাবে খামাল দিয়েও পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়। মাঝে মধ্যে সংরক্ষিত পেঁয়াজ নাড়াচাড়া করে দিতে হবে এবং পচা পেঁয়াজ বেছে সরিয়ে ফেলতে হবে।
পেয়াজ চাষ পদ্ধতি https://www.bamis.gov.bd/crops/view/46
Search
Popular Posts
ধান গাছে থোড় আসার আগে কীটনাশক, ছত্রাকনাশক এবং হরমোন/ভিটামিন স্প্রে করার গুরুত্ব কি?
ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সঠিক সময়ে পরিচর্যা করা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে, থোড় আসার ৭ দিন আগে কীটনাশক, ছত্রাকনাশক এবং হরমোন/ভিটামিন স্প্রে করা হলে গাছের বৃদ্ধি উন্নত হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়। এখানে থোড় আসার আগে স্প্রে করার কারণ ও প্রয়োজনীয়তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। থোড় আসার আগে স্প্রে করার প্রয়োজনীয়তা ১. রোগ ও পোকার…
সার কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?
১. সার কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে? সার হলো উদ্ভিদের পুষ্টি সরবরাহকারী পদার্থ। এটি মাটিতে পুষ্টি যোগ করে, যা গাছ শোষণ করে। নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়ামের মতো উপাদান গাছের বৃদ্ধি, ফলন ও শিকড় শক্তিশালী করে। এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায়। ২. প্রাকৃতিক সার ও রাসায়নিক সারের মধ্যে পার্থক্য কী? প্রাকৃতিক সার জৈব উৎস (গোবর, কম্পোস্ট)…
আলু গাছের স্প্রে করার নিয়ম কি কি ?
আলু গাছকে রোগ ও পোকামাকড় থেকে সুরক্ষিত রাখতে স্প্রে করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক নিয়ম মেনে স্প্রে করলে গাছ ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদন বাড়ে।স্প্রে করার সঠিক পদ্ধতি:গাছের কান্ড ও পাতা ভিজিয়ে স্প্রে করুন:স্প্রেয়ার ব্যবহার করে এমনভাবে স্প্রে করতে হবে যাতে গাছের প্রতিটি অংশ ভিজে যায়।সকালে বা বিকালে স্প্রে করুন:দিনের ঠান্ডা সময় স্প্রে করা উচিত, যাতে…
Leave a Reply